যখন শুনি বাংলাদেশী কারো ভিটামিন ডি অভাব হইছে তখন আসলেই চিন্তায় পইড়া যাই, আসলে কি হইছে? কারন এই একটা খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন বাংলাদেশে অবারিত আর বিনা পয়সায় পাওয়া যায়! শরীরের প্রয়োজনীয়া ভিটামিন ডি র ৮০-৯০% যোগান দেয় সুর্যের আলো! বাংলাদেশে তা এখনো ফ্রি!!!!!! গড়ে বাংলাদেশে ৩৫০ দিন রোদ থাকে সূর্য্য দেখা যায় তাইলে দেশী মাম্মালোগ আর পরিবারের ভিটামিন ডি র অভাব আর অভাব জনিত রোগ কেন হইব?
উক্কে ফার্স্ট থিং ফার্স্ট! ‘ভিটামিন ডি’ র কাম কি শরীরে!
মজবুত দালান বানাইতে স্ট্রাকচার বা ফ্রেম দরকার হয় লোহা দিয়া পিলার কলাম বানানো হয় তার চতুর্পাশে ইটবালু সিমেন্ট দিয়া কাজ শেষ করা হয় তেমন আমাদের শরীরের হাড় দিয়া ফ্রেম তৈরী হয়, এই হাড়ের গঠন হয় ক্যালশ্যিয়াম আর ভিটামিন ডি দিয়া, এইটা আরেকটা জরুরী অংগের গঠনেও সাহায্য করে, দাঁত!
আমাদের বয়স বাড়ে আর তার সাথে আমাদের শরীরের রোদের এক্সপোজার কমে। ঘরে বেশী থাকি আর ‘অস্টিওপোরোসিস’ (ভংগুর হাঁড়) ‘অস্টিওপেনিয়া’ রোগের ঝুঁকি বাড়ে,
খেয়াল করলে দেখবা আমাদের মা, দাদীদের বেশী 0STEOPOROSIS (অস্টিও্পোরোসিস) বেশী হয়, তাদের রোদে এক্সপোজার কতটুকু! তাই হাঁড়ের গঠন আর রক্ষনাবেক্ষনে ক্যালশিয়াম আর ভিটামিন ডি অত্যন্ত জরুরী।
বিভিন্ন খাবার থাইকা ক্যালশিয়াম শরীরে যোগাড় হয়, ক্যালশ্যিয়াম সহজ পাচ্য বস্তু না, ভিটামিন ডি তারে শরীরে মিশা যাইতে সাহায্য করে, অর্থাৎ ক্যালশ্যিয়াম আর ভিটামিন ডি যুগপৎ কাজ করে শরীরের হাঁড়ের স্ট্রাকচার গড়তে, ঠিক রাখতে ভিটামিন ডি এছাড়াও শরীরের মাংশপেশী, স্নায়ূ (নার্ভস) ও প্রতিরোধক (ইম্যিউন) ব্যবস্থার সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রন আর রক্ষনাবেক্ষন করে। ইদানিং গবেষনায় দেখা গেছে ভিটামিন ডি মাল্টিপল সক্লেরোসিস (multiple sclerosis) সহ কিছু ক্যান্সার ঝুঁকি কমাইতে সাহায্য করে।
আমার কতটুক ভিটামিন ডি দরকার?
তালিকা
বয়স লক্ষ্য (আই ইউ) এর নিচে থাক
০-৬ মাস ৪০০ ১০০০
৭-১২ মাস ৪০০ ১৫০০
১-৩ বছর ৬০০ ২৫০০
৪-৮ বছর ৬০০ ৩০০০
৯-৭০ বছর ৬০০ ৪০০০
৭১বছর উর্ধে ৮০০ ৪০০০
গর্ভবতী ও স্তন্যদায়িনী মা ৬০০ ৪০০০
কোন খাবারে ভিটামিন ডি আছে?
গরুর দুধ, আজকাল অনেক বানিজ্যিক পানীয়তে ভিটামিন ডি যোগ করা হইতাছে যেমন সয়া মিল্ক, বোতলজাত কমলার জুস (ফর্টিফায়েড নামে), তৈলাক্ত মাছ (স্যালমন, ম্যাকারেল, টুনা হ্যালিবাট, স্ন্যাপার, সার্ডিন), ডিমের কুশুম, গরুর কলিজা, ম্যাকা মার্জারিন, কড লিভার ওয়েল, ফর্টিফায়েড দই (লেবেল থাকলে চেক কইরা নিতে পার)
কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সের “ইটরাইট অন্টারিও” র মতে যে শিশু শুধু মাত্র মায়ের দুধ খায় তারে প্রতিদিন ৪০০ আই ইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) ভিটামিন ডি দেওয়া উচিত তার ২ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত।
যে শিশু মায়ের দুধ ও ফর্মুলা (তোলা খাবার) খায় তারেও একই ডোজ।
কিন্তু যে শিশু শুধু মাত্রে ফর্মুলা খায় তারে ভিটামিন ডি দেওয়া দরকার নাই কারণ তার ফর্মুলাতে ভিটামিন ডি যোগ করাই থাকে।
কানাডার ফুড গাইড দুই বছরের বয়সের বড় সবার প্রতিদিন ৫০০ মিলিলিটার বা দুই কাপ দুধ অথবা অন্য কোন ফর্টিফায়েড তরল পান করা উচিত, সম্ভব না হইলে ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত অলটারনেট ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর পঞ্চাশোর্ধ মহিলা ও পুরুষ দের ৪০০ আই ইউ ভিটামিন ডি গ্রহন করা দরকার।
আমার শরীরে রোদ লাগে নিয়মিত, রোদে শুনছি ভিটামিন ডি আছে?
হ, চেহারা ও শরীরের অনাবৃত অংশে রোদ লাগলে তা থাইকা প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি শরীরের প্রস্তুত হইব। তোমার ভৌগলিক অবস্থান, শরীরের ত্বক এর রং তোমার বয়স এর উপরে কতক্ষন রোদ লাগাইতে হইব নির্ভর করে।
সপ্তাহে ২-৩ দিন যতটুক সময় রোদে থাকলে সানবার্ন হয় তার চার ভাবের একভাগ সময় রোদ লাগাইলেই (উদারহনঃ একঘন্টা রোদে থাকলে শরীর পুইড়া যায় তাইলে ১৫ মিনিট রাখলেই হইব) যথেস্ট ভিটামিন ডি পাওয়া যাইব। ছোট বেলায় মা’ দের দেখতাম পুচকিদের নেন্টু কইরা সকাল এর নরম রইদে সারা শরীরে তেল মাইখ্যা শরীরে রইদ লাগাইতো! মা রা জানতো না হয়তো ‘ভিটামিন ডি’র চক্কর, কিন্তু কখনো শুনি নাই যে বাচ্চাদের ভিটামিন ডি র অভাব হইছে!
৬ দিন নিয়মিত রোগ লাগাইলে ৪৯ দিন রোদ না লাগানের অভাব মিটাইব, ভিটামিন ডি শরীরের ফ্যাটি এ্যসিডে জমা থাকে, প্রয়োজনে তা শরীর রিলিজ করে।
বেশী বেশী কিছুই ভালো না, তাই ভিটামিন ডিও শরীরে মজুদ করা ঠিক না। চাইলেই পাওয়া যায় ফ্রি, তাই মজুদ করার দরকার নাই।
উক্কে বিনা পয়সায় পাওয়া যায়, মজুদ করার দরকার নাই। তাই এই ব্যাপারে কোন মাম্মালোগের অভিযোগ থাকা উচিত না।
বুদ্ধিমান হও ঠিক কাজটা কর।